ফার্স্ট এইড কি ?
ফার্স্ট এইড হল, কোন আহত বা অসুস্থ্য ব্যাক্তি কে পরিপূর্ণ মেডিকেল চিকিৎসা
পাওয়ার আগ পর্যন্ত তাৎক্ষণিক সহায়তা করা ।
-
ছোট সমস্যা বা আঘাতে ফার্স্ট এইডের চিকিৎসাই অনেক ক্ষেত্রে
রোগীর জন্য যথেষ্ট হয়ে থাকে । কিন্তু বড় আঘাত বা অসুস্থ্যতার ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ
মেডিকেল চিকিৎসা ভালভাবে না পাওয়া পর্যন্ত ফার্স্ট এইড চালিয়ে যেতে হবে ।
-
জরুরী পরিস্থিতিতে ফার্স্ট এইড এর সিদ্ধান্ত জীবন ও মৃত্যুর
ঝুঁকির মাঝেই নিতে হয়।
-
যাদের ফার্স্ট এইডের দক্ষতা বা প্রশিক্ষণ রয়েছে, তারা
সমস্যাগ্রস্থ ব্যাক্তিকে জরুরী অবস্থায় সাহায্য করতে প্রথমে তার অনুমতি নিয়ে
নিবে এবং নিজের পরিচয় দিবে এবং জিজ্ঞেস
করবে আমি কি আপনার সাহায্য করতে পারি ।
সমস্যাগ্রস্থ ব্যাক্তি একেবারেই চেতনা হীন বা মমূর্ষ অবস্থায়, না হলে অনুমতি না নিয়ে
ব্যাক্তির গায়ে স্পর্শ না করাই ভাল
যদি স্বাভাবকি ভাবে বলার পর কোন উত্তর না পাওয়া যায়, কোন জবাব না দেয় তাহলে
হালকা ভাবে ২ কাঁদে হালকা ঝাঁকুনি দিয়ে, জিজ্ঞেস করে নিবেন, আপনি কি ঠিক আছেন,
আপনাকে কি সহযোগিতা করতে পারি ।
আর এতেও সাড়া না পাওয়া গেলে, কোন অনুমতি ব্যাতীতই প্রয়োজনীয় জরুরী সহযোগিতা
করতে হবে ।
এখন আমরা ফার্স্ট এইডের কিছু বেসিক বিষয় সম্পর্কে জেনে নিব,
ফার্স্ট এইডের ব্যাসিক:
ফার্স্ট এইডের প্রথম পদক্ষেপ হল সমস্যা চিন্থিত করণ, ও জরুরী প্রাথিমক চিকিৎসা
দেওয়া ।
যখন ব্যাক্তি সিরিয়াস আঘাত বা হটাৎ সিরিয়াস রোগে আক্রান্ত হয়, সমস্যা চিন্থিত করণে সন্দেহ ও অসুবিধা হয়, তখন
জরুরী ভিত্তিতে স্থানীয় ইমার্জেন্সী হেলপ ডেস্কে কল দেওয়া দরকার । ইমার্জেন্সী হেলপ
কতৃপক্ষ কিছু জরুরী প্রশ্ন করে ইমার্জেন্সী সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসবে । যেমন,
এক্ষেত্রে যদি আমরা বাংলাদেশে থাকি তখন ইমার্জেন্সী সহযোগিতার জন্য যে কোন মোবাইল বা ফোন হতে ৯৯৯ তে কল দিতে
পারি, আর প্রবাসে হলে সংশ্লিষ্ট দেশের ইমার্জেন্সী নম্বররে কল দিব। যেমন সৌদি আরবের সাধারণ
ইমার্জন্সী নম্বর হল- ১১২
আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, অফিসে কিংবা বাসায়, ফার্স্ট এইড কিট বা ফার্স্ট
এইড টুলস এবং এগুলো কিভাবে ব্যাবহার করবেন সে ব্যাপারে আগে থেকেই জেনে রাখুন, এবং
প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ নিয়ে রাখুন । আপনার কর্মস্থল বা বাসায় স্থানীয় ক্লিনিক,
হাসপাতাল বা এ্যাম্বুলেন্স ইত্যাদির নম্বর সংগ্রহ করে রাখুন ।
-
প্রথমেই ব্যাক্তিকে, বিপদের স্থান হতে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে
নিয়ে আসতে হবে, যেমন রোড এক্সিডেন্ট হলে, চলমান রোড হতে নিরাপদ দূরত্বে নিরাপদ
স্থানে, পানিতে পড়ে গেলে পানি হতে উঠিয়ে এনে, বা বিদ্যুৎ বা অন্যান্য উপায়ে
আক্রান্ত হলে, প্রথমেই আক্রান্ত স্থান হতে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনতে হবে ।
যিনি জরুরী ভিত্তিতে ফার্স্ট এইডের সহযোগিতা করবেন, তার নিজেরও সুস্থ ও নিরাপদ
থাকার প্রয়োজন, তার নিজের জন্য এবং সমাজ ও
পরিবেশের জন্যও । তাই সহোযগিতার ক্ষেত্রে নিজের সেফটি তথা নিরাপত্তার জন্য
প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে, যেমন এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে স্কীন তথা আমাদের শরীরে
চামড়া’র নিরাপত্তা, কেননা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া গুলো প্রধানত এবং প্রথমত আমাদের স্কীন
এর উপর হতেই আমাদের শরীরে প্রবেশ করে ।
চলুন তাহলে আমরা প্রথমেই জেনে নিব, আমাদের স্কীনের নিরাপত্তার জন্য আমরা
প্রথমে কি করতে পারি ।
Ø স্কীনের
নিরাপত্তা:
যেহেতু আমরা আমাদের হাত দিয়েই আক্রান্ত বা আহত ব্যাক্তিকে সহযোগিতা করি থাকি,
তাই প্রথমেই হাতের স্কীনের নিরাপত্তার ব্যাবস্থা করতে হবে । এক্ষেত্রে সহযোগিতার পূর্বে আমরা হাতে গ্লাবস
পড়ে নিতে পারি, এবং সহযোগিতার পর গ্লাবস খুলে হাত ধুয়ে নিতে পারি । আর একান্ত
তাৎক্ষণিক হাতের কাছে গ্লাবস না থাকলে, সম্ভব হলে সহযোগিতার পূর্বে হাত ধুয়ে নিতে
পারি । আর অবশ্যাই সহযোগিতার পর ভাল করে সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে নিব । তৎক্ষণাৎ উপস্থিত ক্ষেত্রে সাবান না থাকলে,
সেখানে hand sanitizers. ব্যাবহার করতে
পারি, যদি থাকে ।
আসুন এবার আমরা দেখে নিব, কিভাবে আমরা সঠিক ভাবে হাত ধুয়ে
নিব । কেননা ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার রিস্ক
হতে মুক্ত থাকতে হলে আমাদের কে সহযোগিতার পর বা অন্য যে কোন সাধারণ সময়েও সঠিক
ভাবে হাত ধুতে হবে ।
১- হাতে সাবান লাগানোর পূর্বে আগে হাত পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিন
২- এবার অন্তত ২০ সেকেন্ড হাতে সাবান লাগিয়ে ঘষুন ।
৩- এবার কলের নিচে প্রবাহমান পানিতে হাত ভাল করে ধুয়ে ফেলুন ।
৪- তোয়ালে বা এয়ার ড্রায়ার দিয়ে হাত শুকিয়ে নিন ।
o
গ্লাবস পড়ে কাজ করলে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও জীবানু’র হাত
হতে অনেকাংশেই রক্ষা পাওয়া যায় । আর বিশেষ করে আহত ব্যাক্তির শরীর হতে রক্ত ক্ষরণ
হলে তো অবশ্যই গ্লাবস পড়ে কাজ করবেন ।
এবং সাথে থাকলে মুখে মাস্ক পড়ে নিবেন, এক্ষেত্রে আমরা সর্বদা আমাদের সাথে
মাস্ক রাখতে পারি, এতে যেমনি ভাবে আমরা রাস্তার ধুলো বালি হতে রক্ষা পাব,
তেমনিভাবে জরুরী প্রয়োজনে কাউকে সহযোগিতা করতেও এভাবে এগিয়ে আসতে পারব ।
যখন কাজ শেষে, হাত হতে গ্লাবস খুলবেন তখন অনেক বেশী সাবধানতা অবলম্বন প্রয়োজন,
বিশেষ করে এমন আহত ব্যাক্তিকে সহযোগিতা করার পর, যার শরীর হতে রক্ত বের হয়েছে ।
গ্লাবস খোলার সময় অবশ্যই, গ্লাবসের বাহিরের অংশে খালি হাতে স্পর্শ করবেন না ।
প্রথমে গ্লাবস পরিহিত অবস্থায়, এক হাত দিয়ে অন্য হাতের গ্লাবস খুলে নিবেন,
তারপর অন্য হাতের গ্লাবস খুলতে খালি হাতে অপর হাতের গ্লাবসের উপরে স্পর্শ না
করে, অপর হাতের গ্লাবসের ভিতরের অংশে আঙ্গুল ঢুকিয়ে আস্তে আস্তে টেনে খুলে ফেলুন ।
আমাদের সকলেরই উচিত বাসা বাড়িতে এবং আমাদের কর্মস্থলে একসেট ফার্স্ট এইড কিট
বা বক্স কিনে রাখা এবং এ সংক্রান্ত প্রাথমিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা, যাতে আমরা
বিপদে-আপদে নিজেদের কে এবং অন্যদের কে জরুরী সহযোগিতা দিতে পারি ।
চলুন আমরা এবার জেনে নিব, একটি ফার্স্ট এইড বক্স কি বা ফার্স্ট এইড কিট টুলস
বক্সে কি কি থাকে তার সঙ্গে ।
প্রাথমিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত উপকরণাদি যে
নির্দিষ্ট বাক্সে থাকে, তাকে ফার্স্ট এইড বক্স বলে।
ফার্স্ট এইড বক্স একটি অতি দরকারি জিনিস। প্রয়োজনের সময় দৌড়াদৌড়ি না করে হাতের নাগালে ফার্স্ট এইড বক্স থাকলে খুব সহজেই রোগীকে কিছুটা সামলানো যায়। এতে রোগীসহ আশপাশে লোকজনের অস্থিরতাও অনেকটা কমে। তাই একটা ফার্স্ট এইড বক্স থাকা ও প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে সবার মোটামোটি জ্ঞান থাকা দরকার। প্রয়োজনে তা খুব কাজে দেয়। ফার্স্ট এইড বক্স বহনযোগ্য। ফার্স্ট এইড বক্স স্কুল-কলেজে, অফিস-আদালতে, কলকারখানায় এমনকি বাসা-বাড়িতে বা গাড়িতেও রাখা যায়। বাসায় ও গাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফার্স্ট এইড বক্স থেকে প্রয়োজনের জিনিসটা তুলে নেয়া যায়। ফার্স্ট এইড বক্সে সাধারণত যে সকল উপকরণ থাকে তা হল:
ফার্স্ট এইড বক্স একটি অতি দরকারি জিনিস। প্রয়োজনের সময় দৌড়াদৌড়ি না করে হাতের নাগালে ফার্স্ট এইড বক্স থাকলে খুব সহজেই রোগীকে কিছুটা সামলানো যায়। এতে রোগীসহ আশপাশে লোকজনের অস্থিরতাও অনেকটা কমে। তাই একটা ফার্স্ট এইড বক্স থাকা ও প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে সবার মোটামোটি জ্ঞান থাকা দরকার। প্রয়োজনে তা খুব কাজে দেয়। ফার্স্ট এইড বক্স বহনযোগ্য। ফার্স্ট এইড বক্স স্কুল-কলেজে, অফিস-আদালতে, কলকারখানায় এমনকি বাসা-বাড়িতে বা গাড়িতেও রাখা যায়। বাসায় ও গাড়িতে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য খুব অল্প সময়ের মধ্যে ফার্স্ট এইড বক্স থেকে প্রয়োজনের জিনিসটা তুলে নেয়া যায়। ফার্স্ট এইড বক্সে সাধারণত যে সকল উপকরণ থাকে তা হল:
১। জীবাণুমুক্ত গজ : গজ ব্যাবহার করে ক্ষত হতে রক্ত পড়া বন্ধ করা ও জীবাণু সংক্রমণ কমানো
যায়। এটা ক্ষতস্থানকে নিরাপদে
রাখে, তাতে ময়লা হতে দেয় না এবং ক্ষত থেকে
নিঃসৃত তরল পদার্থ শুষে নেয়।
২। রোলার ব্যান্ডেজ : ড্রেসিংকে তার জায়গায় ভালভাবে আটকে রাখার জন্য বা অতিরিক্ত রক্তপাত হলে, ব্যান্ডেজের ওপর চাপ দিয়ে পেঁচিয়ে রক্ত বন্ধ করতে, রোলার ব্যান্ডেজ ব্যবহৃত হয়। হাতে প্লাস্টার করা হলে তা জায়গামত রাখতে, রোলার ব্যান্ডেজ প্রয়োজন হয়।
৩। কাঁচি : ক্ষতের পাশে প্রয়োজনে পরনের কাপড় কাটা, গজ, ব্যান্ডেজ, মাথার চুল ইত্যাদি কাটার জন্য কাঁচি দরকার।
৫। এন্টিসেপটিক লোশন এবং ক্রিম : ক্ষত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে দরকার হয়। যেমন- স্যাভলন, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, পভিসেভ ইত্যাদি।
৬। বার্ন ক্রিম : পোড়া জায়গায় ব্যথা কমাতে ও ঘা শুকাতে ব্যবহৃত হয়।
২। রোলার ব্যান্ডেজ : ড্রেসিংকে তার জায়গায় ভালভাবে আটকে রাখার জন্য বা অতিরিক্ত রক্তপাত হলে, ব্যান্ডেজের ওপর চাপ দিয়ে পেঁচিয়ে রক্ত বন্ধ করতে, রোলার ব্যান্ডেজ ব্যবহৃত হয়। হাতে প্লাস্টার করা হলে তা জায়গামত রাখতে, রোলার ব্যান্ডেজ প্রয়োজন হয়।
৩। কাঁচি : ক্ষতের পাশে প্রয়োজনে পরনের কাপড় কাটা, গজ, ব্যান্ডেজ, মাথার চুল ইত্যাদি কাটার জন্য কাঁচি দরকার।
৫। এন্টিসেপটিক লোশন এবং ক্রিম : ক্ষত পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করতে দরকার হয়। যেমন- স্যাভলন, হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, পভিসেভ ইত্যাদি।
৬। বার্ন ক্রিম : পোড়া জায়গায় ব্যথা কমাতে ও ঘা শুকাতে ব্যবহৃত হয়।
এছাড়াও ফার্স্ট এইড বক্সে থাকে,
৭। থার্মোমিটার
৭। থার্মোমিটার
৯- মাস্ক
১০- আই শেইল্ড এন্ড আই ওয়াশ,
ইত্যাদি ।
উপরের আইটেমগুলো যদি ফার্স্ট এইড বক্সে হাতের কাছে থাকে, তবে অনেক প্রাথমিক চিকিৎসাই সহজ হয়ে যায়। সঙ্গে কিছু টাকা ও জরুরি কন্টাক্ট নাম্বার থাকলে তো কোন কথাই নেই। সাথে অভিজ্ঞ কেউ থাকলে ‘ফার্স্ট এইড বক্স’ প্রয়োজনে বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিতে পারে।
উপরের আইটেমগুলো যদি ফার্স্ট এইড বক্সে হাতের কাছে থাকে, তবে অনেক প্রাথমিক চিকিৎসাই সহজ হয়ে যায়। সঙ্গে কিছু টাকা ও জরুরি কন্টাক্ট নাম্বার থাকলে তো কোন কথাই নেই। সাথে অভিজ্ঞ কেউ থাকলে ‘ফার্স্ট এইড বক্স’ প্রয়োজনে বটবৃক্ষের মতো ছায়া দিতে পারে।
Post a Comment